- +8801763-852262, +8801815-110582
- alrajiasthma@gmail.com
আল-রাজী এ্যাজমা রিসার্চ এন্ড ট্রিটমেন্ট সেন্টার একটি হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান। ১৯৮৭ সালের ১লা জানুয়ারী ডাঃ মোঃ শফিউল্ল্যাহ ভূঁইয়া প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠা করেন। ঠিকানা- ৫১/২/১ উত্তর মুগদা, ঝিলপাড়, ঢাকা-১২১৪। এই প্রতিষ্ঠানে হোমিও ঔষধের মাধ্যমে আর্তমানবতার সেবা দেয়া হচ্ছে বিগত ৩৯ বছর যাবত। সব ধরণের রোগের চিকিৎসা এই প্রতিষ্ঠানে দেয়া হলেও বিশেষ করে প্রধানতঃ হাঁপানী ও এলার্জি রোগের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এর মূল কারণ হলো এই প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান চিকিৎসক আলহাজ্ব ডাঃ মোঃ শফিউল্ল্যাহ ভূঁইয়ার গর্ভধারীনি মা হাঁপানী রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। তাই ডাঃ মোঃ শফিউল্ল্যাহ ভূঁইয়া আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য এবং তার মায়ের স্মরণে হাঁপানী রোগী চিকিৎসাকেই জীবনের ব্রত হিসাবে বেছে নিয়েছেন।
অতএব এই প্রতিষ্ঠানে বিগত ৩৯ বছর যাবত হাঁপানী রোগের উপর গবেষণা হচ্ছে এবং হাঁপানী রোগের চিকিৎসা হচ্ছে।
ডাঃ মোঃ শফিউল্ল্যাহ ভূঁইয়া নিজে হোমিও চিকিৎসক হয়েছেন এবং তার ৫ সন্তানের মধ্যে ৪ জনকেই দক্ষ হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক তৈরী করেছেন। তারা সবাই জাতির সেবায় নিয়োজিত।
এই প্রতিষ্ঠানের চিকিৎসকবৃন্দ ৫ জন।
আল-রাজী এ্যাজমা রিসার্চ এন্ড ট্রিটমেন্ট সেন্টার এর প্রতিষ্ঠাতা আলহাজ্ব ডাঃ মোঃ শফিউল্লাহ ভূঁইয়া। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া থানার অর্ন্তগত টনকী গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে ১৯৪৯ সালের ১লা মার্চ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম মৌলভী মোঃ আবরু ভূঁইয়া (রঃ) এবং মাতার নাম মরহুমা আরসের নেছা। মৌলভী মোঃ আবরু ভূঁইয়া একজন ওলিয়ে কামেল সূফী সাধক ছিলেন। ৬৩ বছরের হায়াৎ এর মধ্যে তিনি ৪৯ বছরই টনকী গ্রামের সেন্ট্রাল মসজিদের অবৈতনিক ইমাম ও মোয়াজ্জিনের পবিত্র দায়িত্ব পালন করেছেন।
ডাঃ মোঃ শফিউল্ল্যাহ ভূঁইয়া টনকীর প্রাইমারী স্কুল থেকে লেখাপড়া শেষ করে এলাকার প্রাচীনতম উচ্চ বিদ্যালয় মোগড়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে কৃতিত্বের সহিত ম্যাট্রিক পাশ করেন। বোর্ড পরীক্ষায় তিনি অত্র স্কুল থেকে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম স্থান অধিকার করেন।
নবম শ্রেণীতে অধ্যয়নকালেই তার বাবা আবরু ভূইয়া (রঃ) ইন্তেকাল করেন। ফলে ডাঃ মোঃ শফিউল্ল্যাহ ভূঁইয়ার জীবনে নেমে আসে এক মহা দূর্যোগ। পিতৃহারা অসহায় অবস্থায় মোঃ শফিউল্ল্যাহ ভূঁইয়া আখাউড়া উপজেলায় অবস্থিত শহীদ স্মৃতি কলেজ হতে এইচ.এস.সি এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ঐ কলেজ থেকেই স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেন। পরবর্তী কালে তৎকালীন ঢাকা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ হতে এম.এ ডিগ্রী অর্জন করেন। ডাঃ মোঃ শফিউল্ল্যাহ ভূঁইয়ার গর্ভধারীনি মা তার শৈশব থেকেই দূরারোগ্য ব্যাধি হাঁপানী রোগে আক্রান্ত ছিলেন এবং জীবনের শেষ মুহুত পর্যন্ত এই রোগে অসহনীয় কষ্ট ভোগ করে মাত্র ৪৫ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেছিলেন। মায়ের রোগের কষ্ট ডাঃ মোঃ শফিউল্ল্যাহ ভূইয়াকে দারুনভাবে ব্যাথিত করেছিল। তখন তিনি সংকল্প করেছিলেন এবং মহান আল্লাহর কাছে সাহায্য চেয়েছিলেন “হে আল্লাহ আমি একজন হোমিও চিকিৎসক হবো এবং হাঁপানীতে আক্রান্ত আর্তমানবতাকে সুচিকিৎসা দিয়ে নিজেকে ধন্য করবো, আমাকে কবুল করুন, আমাকে সাহায্য করুন”। সেই মোতাবেক ডাঃ মোঃ শফিউল্ল্যাহ ভূঁইয়া ১৯৮৩ সালে বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল (জয়কালী মন্দির, ঢাকা) তে ডি, এইচ.এম.এস কোর্সে ভর্তি হন এবং ১৯৮৭ সালে কৃতিত্বের সহিত ডি, এইচ.এম.এস পাশ করেন।
সেই বছরেই তিনি ঢাকার গোপীবাগ বিশ্বরোডে চেম্বার দিয়ে রোগী দেখা শুরু করেন। চেম্বারে নামকরণ করেন “আল-রাজী এ্যাজমা রিসার্চ এন্ড ট্রিটমেন্ট সেন্টার। শুরুতেই তিনি ঘোষণা করেন যে, নবজাতক থেকে ১০ বছরের নিচের হাঁপানীতে আক্রান্ত রোগদের নিকট থেকে কোন অর্থ গ্রহণ করবেন না, সম্পূর্ণ বিনামূল্যে চিকিৎসা করবেন। তার এই প্রোগ্রামের নাম করণ করেন “আল-রাজী এ্যাজমা কন্ট্রোল মুভমেন্ট ফর চিলড্রেন”। সব রোগের চিকিৎসা করলেও শুধুমাত্র হাঁপানী রোগের চিকিৎসাকে প্রাধান্য দিয়ে হাঁপানী চিকিৎসার উপর গবেষণা শুরু করেন।
২০০১ সালে তিনি হাঁপানী রোগের চিকিৎসা সম্প্রসারন এবং বাংলাদেশের আনাচে কানাচে এই চিকিৎসার দাওয়াত পৌঁছায়ে দেয়ার জন্য “আল-রাজী এ্যাজমা কন্ট্রোল মুভমেন্ট ফর চিলড্রেন” এই প্রোগ্রামের আওতায় বাংলাদেশের ১৫১টি থানায় ১৫১ জন স্বাস্থ্য কর্মী নিয়োগ দিয়ে হাঁপানীর চিকিৎসা দেশের সর্বত্র পৌঁছায়ে দিতে চেষ্টা করেন। এই মিশনের কার্যক্রম দুই বছর চলার পর এক যৌক্তিক কারনে তা বন্ধ করে দেন। পরবর্তীকালে তিনি বাংলাদেশের প্রায় ৪৫টি জেলায় ৮০টি শাখা চেম্বার স্থাপন করে হাঁপানীর চিকিৎসা দাওয়াত মানুষের মাঝে পৌঁছায়ে দিতে চেষ্টা করেন। এখনও ৭টি শাখা চেম্বার নিয়ে কাজ করছেন। ডাঃ মোঃ শফিউল্ল্যাহ ভূঁইয়ার দর্শন হলো, আমি ধনী ব্যক্তি নই, হাঁপানীতে আক্রান্ত বয়স্ক রোগীদের নিকট থেকে ঔষধের মূল্য নিবো এবং ১০ বছরের নিচের হাঁপানীতে আক্রান্ত রোগীদেরকে বিনামূল্যে চিকিৎসা করবো। অদ্য ৩৯ বছর যাবত তার এই স্বাস্থ্য সেবা চালু আছে ইনশাআল্লাহ। এখানে উল্লেখ যে ১৯৯৬ সালে ডাঃ মোঃ শফিউল্ল্যাহ ভূঁইয়া আমেরিকা গমনের সূবর্ণ সুযোগ “ডিভি লটারীর” মাধ্যমে স্বপরিবারে ৬টি গ্রীণ কার্ড ভিসা তিনি পেয়েছিলেন। কিন্তু তার অভিষ্ঠ লক্ষ্য হলো দেশের মানুষের চিকিৎসার মাধ্যমে সেবা করার, তাই তিনি “ডিভি লটারীর” সোনালী সুযোগ প্রত্যাখান করেন।
ডাঃ মোঃ শফিউল্ল্যাহ ভূঁইয়া হাঁপানী রোগে সফলতার জন্য ২০১১ সালে হোটেল রাজমনি ঈশাখাঁতে শিশু স্বাস্থ্য চিকিৎসায় বিশেষ অবদানের জন্য “ম্যান অব দ্যা ইয়ার” এ্যাওয়ার্ড-২০১১ প্রাপ্ত হন।
ডাঃ মোঃ শফিউল্ল্যাহ ভূঁইয়া তার নিজ এলাকায় মসজিদ মাদ্রাসা নির্মাণ ও অনেক জনহিতকর কাজ করেছেন।
১৯৮৫ সালে ডাঃ মোঃ শফিউল্ল্যাহ ভূঁইয়া উপ-মহাদেশের খ্যাতিমান সূফী সাধক সৈয়দ মোঃ ফজলুল করিম (রঃ) পীর সাহেব চরমোনাই, বরিশাল এর হাতে বয়াত হয়ে তার শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন এবং সেই মোতাবেক জীবন পরিচালনা করতে চেষ্টা করছেন।
তিনি ৫ সন্তানের জনক। তার সন্তানগণ আধুনিক ও ইসলামী শিক্ষায় সুশিক্ষিত। এর মধ্যে ৪ জন আল্লাহর রহমতে কোরআনে হাফেজ ও আলেম। পাশাপাশি ৪ জনই ডিএইচ.এম.এস দক্ষ হোমিও চিকিৎসক। তারা সবাই জাতির সেবায় নিয়োজিত। ডাঃ মোঃ শফিউল্ল্যাহ ভূঁইয়া, প্রধান চেম্বার ঢাকায় নিয়মিত রোগী দেখছেন। তিনি বর্তমানে এ্যাজমামুক্ত বাংলাদেশ কিভাবে গড়ে তুলবেন সেই নেটওয়ার্ক নিয়ে সদা সর্বদা কাজ করছেন। তার বয়স বর্তমানে ৭৭বছর চলছে। তার শ্লোগান হল “এ্যাজমা মুক্ত বাংলাদেশ চাই, এ্যাজমা মুক্ত বিশ্ব চাই”।
আল-রাজী এ্যাজমা রিসার্চ এন্ড ট্রিটমেন্ট সেন্টার-এর লক্ষ্য হলো:
হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসার মাধ্যমে হাঁপানি, এলার্জি ও জটিল রোগে আক্রান্ত রোগীদের জন্য নিরাপদ, কার্যকর ও দীর্ঘমেয়াদী চিকিৎসা সেবা প্রদান।
রোগীদের সুস্থ জীবনে ফিরিয়ে আনা এবং ওষুধনির্ভরতা কমিয়ে স্বাস্থ্যসম্মত জীবনধারা নিশ্চিত করা।
দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য ফ্রি চিকিৎসা সেবা প্রদান করে মানবিক মূল্যবোধে ভিত্তি করে সমাজসেবা করা।
বাংলাদেশে হাঁপানি ও এলার্জি চিকিৎসায় হোমিওপ্যাথির একটি বিশ্বস্ত ও অগ্রগামী নাম হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাওয়া।
আধুনিক গবেষণা ও অভিজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে রোগ নিরাময়ে নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করা।
ভবিষ্যতে আরও চেম্বার ও গবেষণা কেন্দ্র স্থাপন করে চিকিৎসা সেবার পরিধি সারাদেশে ছড়িয়ে দেওয়া।